উখিয়ার সেই ১৫ ঘরে তালা দিল প্রশাসন

মুহিবুল্লাহ মুহিব, নিউজ বাংলা :

কক্সবাজারের একটি ইউনিয়নে গৃহহীন হিসেবে যে ১৮ জনকে ঘর দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে কেবল তিনজন সেই ঘরে থাকছেন। বাকি ১৫টি ঘরে তালা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঘরগুলো সম্পদশালীরা বরাদ্দ নিয়ে এর কয়েকটি বিক্রি করেছেন, কেউ আবার ভাড়া দিয়েছেন আবার কেউ অন্যকে উপহার দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজ করে জানা গেছে, যে ১৫ জন ঘর বরাদ্দ পেয়েও সেখানে থাকছেন না, তারা আসলে গৃহহীনই ছিলেন না। তাদের কয়েকজন বেশ সম্পদশালী। একজন আবার সৌদি প্রবাসী, যার তিন তলা ভবন নির্মাণ চলছে। কারও কারও বাড়ির পাশাপাশি জমিজমা আছে।

তারা সবাই ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলমের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতেন। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন যাচাই-বাছাই ছাড়াই এদের গৃহহীন হিসেবে ধরে নিয়ে ঘর দিয়েছে।

উপহারের এসব ঘরের মালিকানা স্থানান্তরযোগ্য না হলেও ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় তা বিক্রির তথ্য মিলেছে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১৪৫টি অসহায় ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ পরিবারকে জমি ও ঘর উপহার দেয় সরকার। এর মধ্যে ১৮টি ঘর দেয়া হয় উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে। ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হলুদবনিয়া এলাকায় খাস জমিতে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়।

হলদিয়াপালং ইউনিয়নের যে ১৮টি ঘর করা হয়েছে, তার মধ্যে কেবল তিনটিতে বরাদ্দপ্রাপ্তদের থাকতে দেখা গেছে। মোহাম্মদ আলী, মনোয়ারা বেগম ও এরশাদ উল্লাহ থাকছেন নিজেদের ঘরে।

গেল ৬ মে নিউজবাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যেসব ঘরে বরাদ্দ পাওয়া লোকজন বসবাস করছে না শনিবার সেসব ঘরে তালা দিয়েছে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন।

রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন সজীব বলেন, ‘যেহেতু প্রাথমিক তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে, সে হিসেবে এসব ঘরে তালা দেয়া হয়েছে। তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে।

তদন্ত করে কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন দেবে। এরপর এসব বরাদ্দ বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

কত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘একজন তহসিলদারের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবেন।’

হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনওর নির্দেশে ইউনিয়নের গ্রামপুলিশের সদস্যরা এসব ঘরে তালা দিয়েছেন। পরে বরাদ্দ পাওয়া প্রত্যেককে নোটিশ দেয়া হয়েছে।’